নারীদের ধর্মীয় শিক্ষায় এগিয়ে নিতে উখিয়ায় যাত্রা শুরু করলো সুফিয়া আহমদ মহিলা মাদ্রাসা

তাওহীদুল ইসলাম রাপী, কক্সবাজার জার্নাল :

নারীদের ধর্মীয় শিক্ষায় এগিয়ে নিতে উখিয়ায় উপজেলার উদ্বোধন হয়েছে সুফিয়া আহমদ মহিলা মাদ্রাসা।

৩ ফেব্রুয়ারী (শনিবার) উখিয়া কলেজ সংলগ্ন টিএন্ডটির লম্বাঘোনা এলাকায় সকাল ৯টায় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উখিয়া কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল ফজলুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী কবির আহমেদ সওদাগর , ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল, বখতেয়ার সওদাগরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

বক্তারা বলেন, “এ অঞ্চলে কোন মহিলা মাদ্রসা নাই। মহিলাদের দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য মহিলা মাদ্রাসার বিশেষ প্রয়োজন ছিলো তা আজ পূরণ হলো। ব্যাক্তি, সমাজ, দেশকে উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। শিক্ষাই পারে সমাজ ও ব্যাক্তিকে অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখাতে। আর সেই শিক্ষা হতে হবে আল্লাহর উদ্দ্যেশে নবীর আদর্শগত শিক্ষা। যার মধ্যে মানবতার মুক্তির সকল নিয়ম-কানুন রয়েছে। নারী জাতির মেধা, মননশীলতা, বিবেক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে নারীশিক্ষায় ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়েছেন। কেননা, তিনি মনে করতেন, নারীকে শিক্ষাবঞ্চিত রেখে যেমন আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়, তেমনি শিক্ষিত জাতি গঠনে এবং পারিবারিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করার জন্য মেয়েদের শিক্ষা কার্যক্রমে আত্মনিয়োগ করা অনস্বীকার্য। যেমনভাবে উম্মুল মুমিনিন কাছে আগত মহিলাদের ধর্মীয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক প্রভৃতি বিষয়ে নৈতিক শিক্ষাদান করতেন। যেমনভাবে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ (সূরা আল-জুমার, আয়াত: ৯) তাই নবী করিম (সা.) স্বয়ং নারীদের বিদ্যাশিক্ষা গ্রহণের প্রতি বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন।

তিনি বিভিন্ন সময়ে নারীদের উদ্দেশে শিক্ষামূলক ভাষণ দিয়ে উদাত্তকণ্ঠে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন করা ফরজ।’ (ইবনে মাজা) ইসলাম নারীকে মৌলিক মানবাধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে পুরুষের সমান মর্যাদা প্রদান করেছে। ইসলাম নারীকে বিদ্যাশিক্ষার অধিকার দিয়েছে। ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের শিক্ষা-দীক্ষা এবং যাবতীয় দায়দায়িত্বের সঙ্গে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ নারীর রয়েছে।

বক্তারা পুরষদের শিক্ষার পাশাপাশি নারীদের বেশি করে শিক্ষিত করে তোলার গুরুত্বারোপ করেন। এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তি করে দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিক্ষায় কৃতিত্বের পুরষ্কার ও সংবর্ধনার দেওয়া শেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন মুফতি ওমর ফারুক।

উল্লেখ্য, উক্ত এলাকার আলমগীর করিম রাশেদ ও তৌহিদুর রহমান মামুন এবং সাজ্জাদ করিম সিফাতের যৌথ প্রযোজনায় মাদ্রাসাটি পরিচালিত হচ্ছে এবং ইতিপূর্বে আলমগীর করিম রাশেদ, সাজ্জাদ করিম সিফাত,আব্দুল্লাহ,দেলোয়ার হোসেন তাদের অপরাপর বন্ধুরা ও কিছু বড় ভাই মিলে মাদ্রারাসা মার্কাযুল হিদায়া নামক একটি মাদ্রাসা করে খুবই সুনাম কুড়িয়েছেন।